কিভাবে কপিরাইট মুক্ত একটি সুন্দর পোস্ট লিখবেন
প্রবন্ধ বিষয়ে জ্ঞান ও কপিরাইট
সাধারণত মানুষ যে বিষয়টি নিয়ে বেশি জানে তাকে সেই বিষয়ে এগিয়ে যাওয়াটাই উচিত। অর্থাৎ আপনি যে বিষয়ে প্রবন্ধ লিখবেন, প্রথমে সে বিষয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ সঠিক জ্ঞান আহরণ করুন। সাহিত্যে একটি কথা আছে, “একটি বই লেখার আগে, দশটি বই পড়তে হয়”।
এ কথাটি শুধু সাহিত্যের জন্য প্রযোজ্য নয়। এটা সবার জন্য নির্দেশনা ও পরামর্শ। তাই ভালো মানের একটি পোষ্ট লিখতে হলে, আপনাকে আরও দশটি পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। সেই সকল পোষ্ট গুলো থেকে আপনাকে ভালো ভালো পয়েন্ট গুলো টুকে রাখতে হবে। পরে সেগুলো নিয়ে একটু গবেষণা এবং সহজভাবে বোঝানোর প্রক্রিয়া অবলম্বন করে পাঠকদের জন্য প্রবন্ধ লেখা উচিত।
তবে হ্যাঁ, কপিরাইটের ক্ষেত্রে একটি কথা বলে রাখি। আপনি যদি চিন্তা করেন যে; দশটি পোস্ট থেকে দশটি অনুচ্ছেদ কপি করে একটি প্রবন্ধ তৈরি করবেন। তাহলে সেটা আপনার ওয়েবসাইটের জন্য মারাত্মক ভুল। কারণ, কপিরাইট পোস্ট রেঙ্ক করেনা।
২০ থেকে ২৫ টি শব্দের অনুচ্ছেদ কপি করলেও কপিরাইটের আওতায় পড়ে। বিশ্বাস যদি না হয়, তাহলে অনলাইনে কিছু Plagiarism Checker বা Duplichecker ওয়েবসাইট রয়েছে। সেই সকল সাইটে গিয়ে আপনার কপি করা প্রবন্ধটি পেস্ট করে দেখুন। সেখানে আপনি কোন কোন ওয়েবসাইট থেকে তথ্য চুরি করেছেন, তার একটা লিস্ট তৈরি করে দেবে তারা।
তবে স্বস্তির বিষয় হলো; আপনি প্রবন্ধকে ফুটিয়ে তুলতে বা পাঠককে বোঝানোর ক্ষেত্রে, উদাহরণস্বরূপ, তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে কোন উক্তি বিশেষ করে মহান ব্যক্তিদের উক্তি, উপদেশ, বাণী এগুলো কপি করতে পারেন। এমনকি একজন বড় ব্লগার, ওয়েবমাস্টার, সোশ্যাল মিডিয়ার, নামকরা ওয়েবসাইট, খবরের একাংশ অথবা গুগলের দেয়া সংক্ষিপ্ত যুক্তি-তর্ক-বিতর্ক গুলোও কপি করতে পারেন। তবে সেটা রেফারেন্স হিসেবে।
সবচেয়ে সান্তনামূলক কথাটি হচ্ছে; আপনার লেখা পোস্টটি যদি ৫% অনিচ্ছাকৃতভাবে অন্য কারো পোস্টের সঙ্গে মিলে যায়। তাহলে গুগল সেটাকে কপি ধরবে না। অনেক সময় লেখার ধরণ অনুযায়ী ১০% পর্যন্ত কপিরাইট হলেও সমস্যা করে না। বিশেষ করে আপনার লেখা প্রবন্ধটি যখন ১০০০ শব্দের বেশি হয়। যদিও Plagiarism Checker বা Duplicate Checker কপিরাইট দেখায়।
আপনি যদি আপনার প্ৰন্ধের অর্ধেকটাই কপিরাইট প্রবন্ধ লেখেন, তবুও কিন্তু কপিরাইট হিসেবে google আপনার প্রবন্ধকে ডিলিট করে দিবে না। তবে শাস্তি স্বরূপ গুগল সার্চ ইঞ্জিনে আপনার পোস্টটি দেখাবে না। অর্থাৎ আপনি যতই চেষ্টা করেন- কপিরাইট যুক্ত পোস্ট কখনোই গুগল সার্চে সাবমিট করে না।
কিভাবে একটি সুন্দর পোষ্ট লিখবেন?
১। সহজ ভাষা ব্যবহার করুন। ঘুরিয়ে পেচিয়ে কলেবর বৃদ্ধি করবেন না। আঞ্চলিক এবং প্রচলিত ভাষার সংমিশ্রণ ঘটাবেন না।
২। উদাহরণ, বাণী বা উক্তির ক্ষেত্রে উদ্ধৃতি কমা “—” বা বোল্ড, ইটালিক অথবা blockquote ট্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। সঠিক জায়গায় যতি-চিহ্ন ব্যবহার করুন। বানানের দিকে নজর রাখুন।
৩। গবেষণা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি সহ যেকোন বিষয় নিয়ে লিখলে প্রবন্ধের মধ্যে ফটো দেয়ার চেষ্টা করবেন। এমন ফটো ব্যবহার করবেন যেটা পরিষ্কার এবং প্রবন্ধের বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
৪। বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত নয় এমন কিছু লিখে প্রবন্ধকে দীর্ঘ করার প্রয়োজন নেই। যতটা সম্ভব মূল বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন। পোস্ট বুঝি ছোট হয়ে গেল! মাথায় এরকম চিন্তা থাকলে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।🤗
৫। পোস্টের ভিতর অতিরিক্ত লিংক ব্যবহার করবেন না। আপনার পোস্ট মানসম্মত হলে, পাঠক অন্য পোস্টগুলো এমনিতেই পড়বেন।
৬। টাইটেল পাঠককে আকর্ষণ করে। তাই, মূল বিষয় নিয়ে সহজ ভাষায় টাইটেল লিখুন। সংক্ষিপ্ত টাইটেল লিখবেন না এবং বেশি দীর্ঘও করবেন না।
৭। প্রবন্ধের সৌন্দর্য একটু হলেও নির্ভর করে অনুচ্ছেদের উপর। তাই যে অনুচ্ছেদ গুলো একটু বড় সেগুলোকে ছোট করুন। অথবা দুই ভাগ করুন।
৮। সম্ভব হলে সাইটে ভালো মানের ওয়েব কাস্টম ফন্ট ব্যবহার করুন। কাস্টম ফন্ট প্রবন্ধকে আকর্ষণীয় করে তুলে। অনেক সময় ফন্টের কারনেও প্রবন্ধের শব্দ গুলো এলোমেলো মনে হয়।
শেষ কথা: কথায় আছে, ‘লিখতে লিখতে লেখক’। তাই যত লিখবেন তত অভিজ্ঞতা বাড়বে এবং একসময় নিজেই বুঝতে পারবেন পোস্ট লেখার সৌন্দর্য সম্পর্কে।