হাতি কেনার মজার ৩টি অংকের ম্যাজিক

প্রিয় পাঠ, এই প্রবন্ধে আমরা হাতি কেনার মজার তিনটি অঙ্ক ধাঁধা নিয়ে আলোচনা করবো। এই তিনটি ধাঁধা জেনে আপনি আপনার পরিবারে কিংবা বন্ধুদের আড্ডার আসলে অবাক করে দিতে পারেন। এখানে আপনি হাতীর বদলে অন্যকিছুও কিনতে পারেন। আসুন এবার শিখে নিই মজার অংক ধাঁধা তিনটি। 

হাতি কেনার মজার ম্যাজিক

এবারের জাদুর অংক আরও অদ্ভুত, আরও কৌতুককর। তুমি মনে মনে কতটা হাতি কিনলে, আমি তা তৎক্ষণাৎ বলে দিতে পারি। 
- ঠিক আছে, আমি হাতি কিনবো। 
- বেশ, তুমি তোমার ইচ্ছামত, এই ধর, ১০, ১৫, ২৪, ৩০, ৮০, ৯০ ইত্যাদি যে-কোন অংকের টাকা ব্যাংকে জমা রাখো। টাকার সংখ্যা আমাকে বলবে না। 
- তোমার কথামত কিছু টাকা ব্যাংকে রাখলাম। 
- টাকা প্রতি মাসিক ২ পয়সা সুদ হিসেবে ব্যাংকে রাখা টাকার এক মাসের সুদ বের কর ও সেই টাকায় ১টা হাতি কেনো। 
- তোমার কথামত এক মাসের সুদের টাকায় একটা হাতি কিনলাম। 
- হাতির দাম মনে রাখ এবং সেই মূল্যে ব্যাংকে জমা রাখা টাকায় যে কয়টা হাতি পাওয়া যায়, কেন। 
- তোমার কথামত সুদের ও ব্যাংকের আসল টাকা দ্বারা হাতি কিনেছি। এখন মোট কতগুলো হাতি কিনেছি বল তো? 
- হিসেব আর কী করবো? তুমি ৫১টি হাতি কিনেছ। ঠিক কি-না বলো তো? 
উত্তর শুনে সবাই অবাক, আসলেই তো ৫১টি হাতি কেনা হয়েছে।

- তুমি ঠিকই বলেছো। আমি ব্যাংকে ২৫ টাকা রেখেছিলাম। ২ পয়সা হিসেবে এক মাসের সুদ হয় ৫০ পয়সা। এই ৫০ পয়সায় ১টি হাতি কিনেছি। তারপর এই ৫০ পয়সা দরে ব্যাংকে রাখা ২৫ টাকায় হাতি কিনেছি। যেমন, ২৫ টাকা ৫০ পয়সা = ৫০টি। 
অতএব, সুদের দ্বারা কেনা ১টা ও ব্যাংকের টাকায় কেনা ৫০টি, মোট (১+৫০) = ৫১টি হাতি কিনেছি। 

- কোন টাকা-পয়সা বা হাতির সংখ্যা না জেনে তুমি কীভাবে চট্ করে উত্তর বলতে পারলে? 
- এসব অংকের কেরামতি। নিয়ম জানলে তুমিও বলতে পারবে। 
- আমি আর একবার পরীক্ষা করে দেখবো?
- একবার কেন, দশবার পরীক্ষা করে দেখতে পারো।

হাতি কেনার মজার ৩টি অংকের ম্যাজিক

হাতি কেনার দ্বিতীয় ম্যাজিক


- ব্যাংকে তুমি ইচ্ছামত টাকা রাখ। টাকা প্রতি মাসিক ৪ পয়সা সুদ হিসেবে এক মাসের সুদের টাকায় ১টি হাতি কেন। এই দরে ব্যাংকে রাখা টাকায় যতটি হাতি পাওয়া যায়, কেন। সুদের টাকায় ও ব্যাংকের টাকায় কেনা হাতি যোগ কর। 
- হ্যাঁ, তোমার কথামত সুদের টাকায় ও ব্যাংকের টাকায় হাতি কিনেছি। এখন বলতো মোট কতটি হাতি কিনেছি? 
- মোট ২৬টা হাতি কিনেছ, তাই নয় কি? 

(এবারও উত্তর শুনে আপনি অবাক হলেন।)
- নিশ্চয়ই তুমি জাদু জান। কেননা, বড় বড় অংকবিদগণও এভাবে বলতে পারবেন না। এর নিয়মটা বলে দাও না।

হাতি কেনার তৃতীয় ম্যাজিক 


- আমি এবার হাতি কিনে তোমাকে পরীক্ষা করবো? 
- বেশ, আমিও তোমাকে জব্দ এবং অবাক করবো। 
- এবার আমি আমার ইচ্ছামত বার্ষিক টাকার সুদ ১০ পয়সা হিসেবে ধার্য করে অংক কষবো। তোমার অমত নেই ত? 
- অমতের কী আছে? তবে অংক কষার আগেই বলে দিচ্ছি, তোমার কেনা হাতির সংখ্যা হবে ১১টি।
- উত্তর যখন বলেই ফেললে, তখন প্রকাশ্যেই অংকটি খাতায় করছি। 
- বেশ, তাই কর, 'blogniye' সাইটের সকল পাঠক দেখুক। 

- আমি ৪৯ টাকা ব্যাংকে রাখলাম। বার্ষিক সুদ টাকা প্রতি ১০ পয়সা হিসেবে ৪৯ × ১০ = ৪৯০ পয়সা ১ বৎসরের সুদ। ইহা দিয়ে আমি ১টি হাতি কিনলাম এবং এই দরে ব্যাংকের ৪৯ টাকায়, ৪৯ × ১০০ ÷ ৪৯০ = ১০টা হাতি কিনলাম। 

- এখন দেখ, সুদের টাকায় কেনা ১টি ও ব্যাংকের টাকার কেনা ১০টি মোট ১১টি হাতি হলো কি-না? উত্তর কিন্তু আমি আগেই বলে দিয়েছি। 
- এ-যে দস্তুর মত ভোজবাজী। কি করে বললে, বল না? 

- ইহা জাদুও নয়, ভোজবাজীও নয়। নিছক গণিত শাস্ত্রের কেরামতি মাত্র। এখানে বিশেষ কোন কঠিন হিসেব নেই। মাত্র মাসিক সুদের অংক তা পয়সাই হোক আর টাকাই হোক, সেই টাকা বা পয়সার সংখ্যা দিয়ে ১০০-কে ভাগ করলে ব্যাংকের টাকার হাতি পাওয়া যায়। 

ব্যাংকের টাকার হাতির সাথে সুদের টাকার হাতি ১ যোগ করলে উহাই উত্তর জানবে। মোট কথা, সুদের সংখ্যা দিয়ে ১০০-কে ভাগ করে ১ যোগ কর। উহাই উত্তর। ৫০ পয়সায় কি হাতি কিনতে পাওয়া যায়? ইহা কি সম্ভব?
আর্টিকেল টি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী প্রবন্ধ
মন্তব্য নেই
মন্তব্য করুন
comment url